শরতের নিজস্ব একটা গন্ধ আছে। ভোরের শিশিরভেজা মাটি আর দুর্বাঘাস থেকে, সকালের ঝরা ফুলের শিউলিতলা থেকে, ভরদুপুরের দিগন্তজোড়া পাকা ধানের ক্ষেত থেকে, বাহারি বিকেলের বাতাসে ঢেউ খেলানো কাশবন থেকে, সন্ধ্যায় মাটি ছুঁয়ে ভেসে চলা হালকা কুয়াশা থেকে এই গন্ধেরা মিলেমিশে এক অনাবিল আনন্দের অনুভব দেয় মনে। এই গন্ধটা নাকে আসলেই জানতাম পূজা আসছে। স্কুলের বন্ধুরা চোখ বুঁজে বুক ভরে নিঃশ্বাস নিয়ে বলতাম–দেখ, বাতাসে পূজার গন্ধ! এরই মধ্যে চলে আসতো মহালয়া। সূর্যোদয়ের আগে রেডিওতে বেজে উঠতো বীরেন্দ্র কিশোর ভদ্রের মন্দ্রকণ্ঠে চণ্ডীপাঠ–দেবী দুর্গার বোধন। অনেকদিন হয়ে গেলো শরতের এই গন্ধটা আর পাই না। জলবায়ু পরিবর্তন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, কিংবা নাকের বয়স হয়ে যাওয়া–যে দোষেই হোক না কেন, এই গন্ধটা হারিয়ে ফেলা একটা শূন্যতার বিহ্বলতা সৃষ্টি করে মনে। যেন এই গন্ধের সঙ্গে আমার শৈশব-কৈশোরও...